ঝিকরগাছা উপজেলা
ঝিকরগাছা বাংলাদেশের যশোর জেলার অন্তর্গত ভারতের সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের গোয়ালহাটি গ্রামে এক ভীষণ যুদ্ধ হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে গোয়ালহাটি যুদ্ধ নামে পরিচিত। ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার অধীনে এই যুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ প্রাণপণ যুদ্ধ করে হানাদার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করেন। বাংলাদেশের ফুলের রাজধানী বলে খ্যাত গদখালি এই উপজেলার একটি দর্শনীয় স্থান। ঝিকরগাছা উপজেলা শহরটি কপোতাক্ষ নদের তীরে গড়ে উঠেছে।
অবস্থান ও আয়তন
যশোর জেলা সদর থেকে দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার দূরে, ভৌগোলিক অবস্থান উত্তর অক্ষাংশের ৮৯°০৪' এবং ২২°৫৭' উত্তর অক্ষাংশ এর মধ্যে ৮৯°০৭' এবং ৮৯°২২' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ মধ্যে অবস্থিত। এই উপজেলার আয়তন ৩০৮.০৮ বর্গকিলোমিটার। উত্তরে চৌগাছা উপজেলা, দক্ষিণে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলা, পূর্বে যশোর সদর উপজেলা ও মণিরামপুর উপজেলা, পশ্চিমে শার্শা উপজেলা।
ইতিহাস
প্রায় অধিকাংশ ঐতিহাসিক স্থানের নামকরণে বির্তক আছে। ঝিকরগাছার নাম করণেও এ বির্তক থেকে মুক্ত নয়। অধিকাংশের অভিমত জিংকর নামক একজন ইংরেজ এখানে নীল কুঠি স্থাপন করেছিলেন। এই নীল কুঠিকে ঘিরে একটি বাজার স্থাপিত হয়। জিংকর সাহেবের নাম অনুসারে সেই বাজারের নাম হয় জিংকর গঞ্জ। অতীতে বাজারকে গঞ্জ বলা হতো। গঞ্জ থেকে গাছার উৎপত্তি হয়েছে। ক্রম বিবর্তনে হয় ঝিকরগাছা বাজার। পরবর্তীতে থানার নাম হয় ঝিকরগাছা।ঝিকরগাছা থানা গঠিত হয় ১৯০৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৮৮ সালে।
প্রশাসনিক এলাকা
এ উপজেলার আয়তন ৩০৮.০৮ বর্গকিলোমিটার।
ইউনিয়নসমূহঃ
জনসংখ্যা
১৪ জন। পুরুষ ও মহিলার সংখ্যা যথাক্রমে ১,৩৮,৫০৭ জন ও ১,৩২,৫০৭ জন।
শিক্ষা
১.গঙ্গানন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২.ঝিকরগাছা বিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩.এমএল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪.পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
১. গঙ্গানন্দপুর ডিগ্রী কলেজ ২. সরকারি শহীদ মুশিয়ুর রহমান কলেজ ৩. সম্মিলনী মহিলা কলেজ ৪.শিমুলিয়া সেন্ট লুই কলেজ।
অর্থনীতি
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, ডাল, গম, আলু, তুলা, রজনীগন্ধা, সুপারি, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি বিভিন্ন প্রকারের ডাল।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, জাম, পেঁপে, লিচু, নারিকেল, কলা।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য খেজুর গুড়, নারিকেল, সুপারি, রজনীগন্ধা, আলু, শাকসবজি, তুলা, বিড়ি।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।
অৰ্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ফুলের রাজধানী গদখালী।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৫.৯৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯৭%, শিল্প ২.০৯%, ব্যবসা ১২.৮৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.৭২%, চাকরি ৪.০৩%, নির্মাণ ১.৩৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৫৩% এবং অন্যান্য ৫.১৫%।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.১৮%, পুকুর ০.১৮%, ট্যাপ ০.৫৭% এবং অন্যান্য ৩.০৭%।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ৫৮, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ২, নাট্যদল ৫, যাত্রাপার্টি ১।
সংস্কৃতি
বৃটিশ শাসনামলে কীর্তন, জারী, পালাগান, কবিগান, বাউল, মুর্শিদী, লোকগীতি, ভাওয়াইয়া, যাত্রা ইত্যাদি অনুষ্ঠান হতো নানা উৎসব উপলক্ষ্যে। গ্রামীণ খেলাধুলারও প্রচলন ছিল।
দর্শনীয় স্থান
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS